দিনটি ছিল হাজার ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৭। সেই আজ থেকে প্রায় ১২৫ বছর আগের ঘটনা। ঐতিহাসিক দিনটিতেই স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্ব বিজয় করে এই বাংলায় প্রথম পা রেখেছিলেন বজবজের মাটিতে। ১৯৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার চিকাগো মহা ধর্ম সম্মেলনে বক্তব্য রেখে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পরিক্রমা শেষে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মোম্বাসা জাহাজে স্বামীজীর সঙ্গে ছিলেন প্রায় জনা ২০ দেশি-বিদেশী সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসীনি। জাহাজ এসে খিদিরপুর ডকে নোঙর করার কথা থাকলেও ১৮৯৭ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বজবজ জেটিতে অকস্মাৎ কারণে জাহাজটি দাঁড়িয়ে পড়ে। সেখানে সারারাত জাহাজে কাটিয়ে পরদিন অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে স্বামীজী ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা আসেন তৎকালীন বজবজ স্টেশনে। বর্তমান যা ইয়ার্ড মাস্টারের অফিস নামে পরিচিত।
সেখানে এসে একটি চেয়ারে বিশ্রাম নেন স্বামীজি। খানিকক্ষণ পরে টিকিট কেটে শিয়ালদার উদ্দেশ্যে রওনা হন। শিয়ালদা স্টেশনে নামার পর স্বামীজীকে প্রায় ২০ হাজার মানুষ শোভাযাত্রা সহ আলমবাজার মঠে নিয়ে যান। সেই দিনটির স্মরণে স্বামীজীর পদধূলিপূণ্য পূণ্যভূমি বজবজ থেকে পূর্ব রেলের সহযোগিতায় একটি স্বামীজী স্পেশাল ট্রেন শিয়ালদা যায়। স্বামীজির মূর্তি সহ ট্রেনটিকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় বিভিন্ন স্টেশনে। বজবজে এই সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বজবজ পুরসভা ও বজবজ স্বামী বিবেকানন্দ স্মারক কমিটি। স্বামী বিবেকানন্দ স্মারক কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বজবজ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এই অনুষ্ঠানটির প্রথম উদ্যোগ নেন প্রায় ৩৬ বছর আগে। এই বছর ৩৭ বছরে পদার্পণ করল স্বামীজী ট্রেন যাত্রা। যদি শারীরিক অসুস্থতার কারণে শ্রদ্ধেয় গণেশ ঘোষ এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেন নি এই প্রথমবার।
বজবজে ট্রেনটির সূচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলমবাজার মঠের স্বামী কাশিকানন্দ সহ অন্যান্য সাধু মহারাজরা এবং বজবজ পুরসভার প্রাক্তন উপপুরপ্রধান গৌতম দাশগুপ্ত, পুর প্রতিনিধি কৌশিক রায়, অভিষেক সাউ, বজবজ পুরসভার কার্যকরী আধিকারিক লুসি তরফদার, ডাঃ শেখর রায়। এই দিনটি স্মরণে বিভিন্ন বক্তা 125 বছর আগে বিশ্ববরেণ্য ভারত সন্তান স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ধর্ম মহাসভা পরবর্তী সময় কালে বিশেষ বিশেষ ঘটনার কথা শুধু আমেরিকা থেকে ভারতে আসার যাত্রাপথে নানা খুঁটিনাটি গুরুত্বপূর্ণ কথা গুলি তুলে ধরেন এই দিনটি উপলক্ষে। রেল ও স্থানীয় পৌরসভার পক্ষ থেকে পক্ষ স্বামীজি স্পেশাল ট্রেন চলাচল ও এই ধরনের প্রয়াস নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্মের মধ্যে অভিনব বার্তা বহন করবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।