অবশেষে পুড়ে যাওয়ার দীর্ঘ চার বছর পর, পুনর্নির্মিত মন্দির স্থাপন করা হল ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী সহ দশটি বিগ্রহ - Khabar Banga | খবর বঙ্গ! - Breaking News! Latest News in Bengali! Today News Jalpaiguri! অবশেষে পুড়ে যাওয়ার দীর্ঘ চার বছর পর, পুনর্নির্মিত মন্দির স্থাপন করা হল ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী সহ দশটি বিগ্রহ

অবশেষে পুড়ে যাওয়ার দীর্ঘ চার বছর পর, পুনর্নির্মিত মন্দির স্থাপন করা হল ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী সহ দশটি বিগ্রহ

অনুপম রায়, বেলাকোবা, ২৯ শে মার্চ : ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগানের ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরানির ও সন্ন্যাসী আনন্দ পাঠকের মন্দির সহ দশটি বিগ্রহ।
তখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মন্দির নতুন করে গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সেই মত রাজ‍্য সরকার মন্দিরের পুনর্নির্মাণ করে ও নতুন বিগ্রহ বসানোর উদ‍্যোগ নেন। তবে এবার অপেক্ষার অবসান। অবশেষে দেবী চৌধুরানী মন্দির পুড়ে যাওয়ার দীর্ঘ চার বছর প্রতীক্ষার পর এবার পুনর্নির্মিত মন্দির স্থাপন করা হল ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী সহ দশটি বিগ্রহ। 
এদিন মঙ্গলবার (২৯ মার্চ ২০২২) বিকেল চারটা নাগাদ জলপাইগুড়ির ভিউ ম‍্যানেজম‍েন নির্মাণ কেন্দ্র থেকে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে দুটি পিগ আ‍্যাপ ভ‍্যানের মাধ্যমে বিগ্রহ এসে পৌছায় বেলাকোবার বটতলায়। এরপর বিধায়ক খগেশ্বর রায় নেতৃত্বে বেলাকোবা বটতলা থেকে আদিবাসী নৃত্য, মাদল, ঢাক - ঢোল বাজিয়ে মন্দিরের উদ্দেশ্য বিগ্রহ নিয়ে শুরু হয় শোভাযাত্রা।
প্রায় দুই কিমি পথ শোভাযাত্রা করে নিয়ে আসার পর সন্ধ্যা ছয়টায় বেদি শোধন করে পুনর্নির্মিত মন্দিরে স্থাপন করা হল ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানী সহ গঙ্গাদেবী.তিস্তাবুড়ী, সিদ্ধীপুরুষ, রঙ্গলাল, শ্রীগাল, বাগ ও তাদের পৌহড়ি হিসেবে দু জনের বিগ্রহ।
এই বিষয়ে রাজগঞ্জ বিধায়ক খগেশ্বর রায় জানিয়েছেন, খুব ভালো লাগছে, আমরাদের পূর্ব পুরুষের আমল থেকে এই পূজোর রীতিনীতি ছিল, ঐতিহাসিক আমলের মন্দির ও বিগ্রহ আজ আমরা ফিরে পেলাম, আগামীকাল বুধবার দুপুর ১ টায় মন্দিরের পুজো হয়ে সাধারণের জন্য আমরা মন্দির খুলে দেব। 
স্বাভাবিক ভাবেক দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এদিন মন্দিরে বিগ্রহ স্থাপনকে কেন্দ্র করেই শিকারপুর বাগান চত্বর হয়ে উঠেছে চা শ্রমিকদের উৎসবের আলোল্লাস। বিগ্রহ পৌছানোর আগেই বেলাকোবার বটতলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ জমায়েত হয়ে আনন্দে করছিল নাচ - গান। এরপর জলপাইগুড়ি থেকে বিগ্রহ এসে পৌছায়, তারপর বিগ্রহকে নিয়ে নাচে গানে মাদনের তালে শুরু শোভাযাত্রা।
শোভাযাত্রার অংশগ্রহণ করেন শত শত মানুষ। শোভাযাত্রার অংশগ্রহণকারী ভক্তদের একটাই বক্তব্য, দীর্ঘ দিন পর আজ আমরা ভগবানকে মন্দিরে স্থাপন করতে চলছি, এর থেকে আনন্দের কিছু নাই। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক খগেশ্বর রায়, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাপতি উত্তরা বর্মণ, ডিপিএসসির চেয়ারম্যান লক্ষ মোহন রায়, শিকার পুর অঞ্চলের উপ প্রধান অমলেন্দু ভৌমিক, রাজগঞ্জের আইসি পঙ্কজ সরকার, বেলাকোবার ওসি বুদ্ধদেব ঘোস সহ অনান‍্য আধিকারিকগন। 
স্থানীয় সোনু বড়াই, এতোয়া ওড়াও, মামনী মন্ডল, অনিতা দাস সহ একাধিকের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করে ছিলাম কবে মন্দিরে আমাদের ভগবানকে প্রতিষ্ঠা করা হবে, আজ সেই দিন, অনেক খুশী আমরা, মনে হচ্ছে আমরা নতুন করে জীবন পেলাম। রবিবার শিলিগুড়িতে এক সরকারি অনুষ্ঠান থেকে পুনর্নির্মিত এই দেবী চৌধুরানীর মন্দিরের উদ্বোধন করেন মুখ‍্যমন্ত্রী। এরপরই মন্দিরে বিগ্রহ বসিয়ে আগের মতো পূজা অর্চনা যাতে যথারীতি হয় সেই উদ‍্যোগ নিলেন বিধায়ক খগেশ্বর রায়। মঙ্গলবার বিগ্রহ স্থাপন হয়,
বুধবার থেকে নতুন করে তৈরী করা দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দিরে পুজো শুরু হল।এদিন রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর গ্রামপঞ্চায়েতের দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দিরে পুজো দিয়ে সকলের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মন, জলপাইগুড়ি জেলার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পূর্ণিমা রায়, রাজগঞ্জের বিডিও পঙ্কজ কোনার সহ অন্যান্যরা।

Advertisement
close