আমরা যেমন প্রেম কাহিনী সিনেমাতে দেখে থাকি, ঠিক সেই চিত্র এবার জলপাইগুড়িতে। মাঝ রাস্তায় দাড়িয়ে যুবক, একদিকে হাত ধরে টানছে বউ, অন্য আর এক ধরে টানছে প্রেমিকা। কী করবে বুঝতে উঠতে না পেরে জেল থেকে বেরিয়ে আবাও ফিরতে হল থানায়।
-----------------------------------
জলপাইগুড়ি রাজগঞ্জ ব্লকের ভুটকির হাট এলাকায়। সেখানকার বাসিন্দা হাসান মহম্মদ। ২০০৯ সালে ওই এলাকারই বাসিন্দা সইদুল খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ওই এলাকারই অপর এক মহিলা অঞ্জুমা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান হাসান। মাস তিনেক আগে ঘর বাধার স্বপ্নে প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়েও যান তিনি। কিন্তু ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন স্ত্রী সইদুই। সোজা গিয়ে থানায় হাসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে হাসান ও তাঁর প্রেমিকা অঞ্জুমাকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতে পাঠালে তাঁদের দু’জনের জেল হেফাজত হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনই গত রবিবার থেকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন।
এরপর শনিবার বেলার দিকে দু’জন জেল থেকে ছাড়া পায়। হাসান-অঞ্জুমা পরিকল্পনা করেন এইবার অন্তত সংসার করবেন। কিন্তু ওই যে স্ত্রী বড়োই একরোখা। সে তো স্বামীকে অন্য কারোর হাতে ছাড়তে নারাজ। যেই মুহূর্তে অঞ্জুমা হাসানকে নিয়ে তাঁর বাপের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে যেতে গেল, কোলে বাচ্চা নিয়ে তাঁদের পথ আগলে দাঁড়ায় স্ত্রী সইদুল খাতুন। এরপর যেন সিনেমার প্লট! জেলখানার সামনের রাস্তার উপরই হাসানের দু’হাত ধরে দুইজন মহিলা দুই দিকে টানতে থাকে। এদের হাত থেকে বাঁচতে হাসান কাছে থাকা একটি ট্রাফিক কিয়স্কে দৌড়ে গিয়ে ঢুকে পড়ে।প্রকাশ্য রাস্তায় এই দৃশ্য দেখে ভিড় জমায় পথ চলতি মানুষেরা। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেন থানায়। পুলিশ এসে তাদের তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
অঞ্জুমা খাতুন বলেন, ‘হাসানের সঙ্গে আমার সাত বছর ধরে ভালোবাসার সম্পর্ক। মাস তিনেক আগে আমরা বিয়ে করব। দু’জনেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র রয়েছি। যেহেতু আমার পরিচয়পত্র বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে পারিনি তাই আমরা বিয়ে করতে পারিনি। কিন্তু আমরা তিন মাস ধরে একসাথে আছি। আমি চলে আসার পর আমার স্বামী অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। এখন আমি বাড়ি ফিরে গেলে আমাকে ঘরে তুলবে না। তাই আমি আমরা দুজনেই একসাথে জেলে ছিলাম। আজ ছাড়া পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলাম। আমরা বিয়ে করবো।’ অপরদিকে সইদুল খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী জেলে ছিল। আজ ছাড়া পেয়েছে। আমি তাকে নিতে এসেছি। ও এখন আমার সাথে বাড়ি ফিরে যাবে।’ স্থানীয় বাসিন্দা রতন রায় বলেন, ‘রাস্তার উপর দুই মহিলা মিলে একজন লোককে টানাটানি করছিল। দৃশ্য দেখতে রাস্তায় ভিড় হয়ে জ্যাম হয়ে যায়। এরপর আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ওদের নিয়ে যায়।’