সম্প্রতি কিছুদিন আগেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস না করা, ছাত্র-ছাত্রীদের পাস করে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন আমরা দেখেছিলাম। এবং সেই আন্দোলন চলাকালীন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের ভিড়ে, ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক কান্ড কীর্তি চোখে পড়েছিলো এবং নেট দুনিয়ায় ভাইরালও হয়েছিলো। তবে সে আর মনে রাখার কথা না, দিন যেতেই সেই সব কথা কেউ আর মনে রাখে না। আর যারা এই ভুল করেছিলেন তারাও হয়তো ভুল শুধরে নেওয়ার চেষ্টা রাখেন। তবে জলপাইগুড়িতে ঘটে যাওয়া এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা যেন অবাক করার মত!
জানা যায় ফুলের নামের বানান ভুল করায় গৃহ শিক্ষিকার মারে পা ভাঙল এক শিশুর। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এই ঘটনার পর শিশুর পরিবারের তরফে জলপাইগুড়ি কোতয়ালি থানায় গৃহ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা যায়। অন্যদিকে, পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু করে মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শিশুটির পরিবারের তরফে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষিকার শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
এই ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। জানা যায় শুক্রবার দিন সন্ধ্যায় অন্যান্য দিনের মতোই প্রতিবেশি গৃহ শিক্ষিকার কাছে পড়তে গিয়েছিল ওই শিশুটি। তার সঙ্গে ওই গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়তে গিয়েছিল এলাকারই আরও একজন শিশু। পড়া শেষে শিশুটিকে গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে আনতে যান মা। সেই সময় ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মা লক্ষ্য করেন ছেলে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। কেন সে খুড়িয়ে হাঁটছে প্রশ্ন করতে শিশুটি তাঁর মাকে জানায় দিদিমনি লাঠি দিয়ে তার পায়ে একাধিকবার মেরেছে। তাতেই ব্যথা অনুভব করছে সে। বাড়ি ফিরে এসে রাতে মা তার সন্তানের পায়ের ব্যথা জায়গা খতিয়ে দেখতে গিয়ে অবাক হয়ে যান শিশুর মা। শনিবার সকালে পায়ের ফোলা দেখেই শিশুটির পরিবারের সদস্যরা আন্দাজ করেন আঘাত যথেষ্টই গুরুতর। শিশুটিকে পরিবারের সদস্যরা জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে এক্সরে করাতে দেখা যায় শিশুটির ডান পায়ের হাঁটুতে হাড় ভেঙে গিয়েছে। তারপর পায়ে প্লাস্টার করানোর পর শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা।
তবে কেন দিদিমনি শিশুটিকে লাঠি দিয়ে মেরেছে? প্রশ্ন করতেই শিশুটি জানায়, বানান ভুল করায় তাকে দিদিমনে মারধর করে। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষিকা মারধরের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন। ঘটনার জেরে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেছে শিশুটির পরিবার। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পাল জানান, ‘অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ঘটনার বিস্তারিত জানতে শিশুটির বাড়িতে এবং প্রতিবেশিদের সঙ্গে কথা বলতে পুলিশ অফিসাররা সেখানে গিয়েছেন। আমরা শিশুটির বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।‘