গজলডোবা সংলগ্ন সরস্বতি পুর চা বাগান এলাকার এই জায়গা গুলো চেনেন? Know these places in Saraswatipur tea garden area adjacent to Ghajaldoba? - KhabarBanga.In - খবর বঙ্গ! Breaking news! Latest news in bengali! Today News, গজলডোবা সংলগ্ন সরস্বতি পুর চা বাগান এলাকার এই জায়গা গুলো চেনেন? Know these places in Saraswatipur tea garden area adjacent to Ghajaldoba?

গজলডোবা সংলগ্ন সরস্বতি পুর চা বাগান এলাকার এই জায়গা গুলো চেনেন? Know these places in Saraswatipur tea garden area adjacent to Ghajaldoba?

-----------------------------------
এই মুখারিত নদী জঙ্গল, ঝিমঝিম স্তবদ্ধতা, ছুয়ে যায় মেঘ সকালর রাত্রি, নিরবধি শূন‍্যতা। মনে হয় শুভঙ্কর দে এই কবিতা যেন লেখা হয়েছে বৈকন্ঠ‍্যপুর জঙ্গলের (Baikanthyapur forest) ভিতরে সরস্বতীপুর চা বাগাননের (Saraswatipur tea garden) দৃশ্য নিয়ে । কিছুজন এই জায়গার কথা জানলেও বতর্মানে লোকচক্ষুর আরালেই রয়ে আছে এই জায়গা। পাহাড়, নদী, জঙ্গল– সব মিলিয়ে 'প্রকৃতি' বলতে যা বোঝায়, তার সব থেকে লাগসই উদাহরণ এই জায়গা। চারদিকে শুধু বন–নদী –পাহাড় আর নানা গাছের সমারোহ শান্তিকে হাতের মুঠোয় তুলে দেয়।

ঠিক কোথায় রয়েছে এই জায়গা?
বেলাকোবা (Belakoba) শহর থেকে সোজা উত্তরে খানিকটা গেলেই পরবে গেটবাজার (Gatebazar)। সেখানে থেকে সোজা উত্তরে ক‍্যানেল ব্রীজ পার করে মান্তাদারি জঙ্গল (Mantadari forest)। সেই জঙ্গলের মধ্যে আকাঁবাকা রাস্তা দিয়ে চলে যাওয়া যায় সরস্বতীপুর চা বাগান। অনেকেই এই জায়গাটি আবার নিপানিয়া (Nipaniya) নামেও চিনে থাকেন। চারপাশে বৈকন্ঠ‍্যপুর ফরেস্টের ঘন জঙ্গল, সেই জঙ্গলের পাশ কাটিয়ে পূর্বদিকে গেলেই দেখা যাবে পাহাড়ের পর্বতমালা। আর সেই পাহাড় থেকে সমতলের দিকে নিজ স্রোতে বয়ে চলছে প্রবাহমান তিস্তা। সব মিলিয়ে আলাদাই এক মনোরম পরিবেশ এখানে। আর এই পরিবেশের আনন্দ উপভোগ করতে এই জায়গা যেন এখন এক পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিন পর্যটকেরা ঘুরতে আসে তবে রবিবার করে পর্যটকদের সংখ্যা থাকে অনেকটাই বেশি।
কারন এই জায়গা থেকে খানিকটা দুরেই রয়েছে গজলডোবা (Gazaldoba)। যেতেও খুব একটা বেশি সময় নয় প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের রাস্তা। তাই অনেক পর্যটক গজলডোবাতে ঘুরতে আসলে এখানে বেরাতেও আসেন। বতর্মানে গজলডোবায় পর্যটন দপ্তরের প‍্যাকেজেও সরস্বতী পুর চা বাগান যোগ হয়েছে। তাই পর্যটকদের সংখ্যা ভালোও। সরস্বতীপুর চা বাগানের বিশেষ আকর্ষণ রবিবারের হাট। কারন হাটের মাধ্যমেই বসে বনোভোজন। বেলাকোবার বাসিন্দারা বাসিন্দারাতো বটেই শিলিগুড়ি (Siliguri), জলপাইগুড়ির(Jalpaiguri) বহু বাসিন্দা বিশেষত তরুণ বয়সী ছেলের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আকর্ষণীয় হবেই বা না কেন? কেউ যদি এমনিও ঘুরতে এসে পিকনিক খাওয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে সেটিও সম্ভব। রবিবার করে সেই হাটেই মাংস, উনান, কড়াই, কাটা পেয়াজ - রসুন থেকে শুরু করে রান্না করে দেওয়ার লোকও পযর্ন্ত পাওয়া যায়।
ফলে পকেটে টাকা থাকলেই তা সম্ভব। আর মূলত তাই এই নিপায়নী এখন এক পর্যটক কেন্দ্রের পাশাপাশি পিকনিক স্পটের জায়গা হিসেবেই হয়ে উঠেছে। হাটের থেকে সোজা উত্তরে রাস্তা দিয়েই জঙ্গল ঘেষে তিস্তা। গরমের সময় অনেক পর্যটক আবার এখানে আসলে তিস্তার ঠান্ডা জলে স্নান করতে ভুলেন না। পর্যটকদের মধ্যে আমরা বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলি। যার মধ্যে বেলাকোবার মৃন্ময় রায় বলেন, আমাদের বন্ধুদের প্রতি রবিবার এই জায়গা ডেস্টিনিশন হয়ে উঠেছে, আসার সময় মান্তাদারির জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আসি তারপর এখানে হাটে বাজার করে তিস্তার পাশে শাল গাছের নীচে গিয়ে পিকনিক করে গাজলডোবা ঘুরে বাড়ি যাই। শিলিগুড়ি থেকে আসা সোমেন সরকার নামে আরেক পর্যটকের মুখেও একি কথা। তিনি বলেন, শিলিগুড়ির দিকে পাহাড়ি সাইডে অনেক ঘুরেছি গত কয়েক মাস আগে এই জায়গার সম্বন্ধে বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি তাই গত কয়েক রবিবার হলো এখানে আসছি, সারাদিন ঘুরে, আড্ডা মেরে সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরে যাই। বতর্মানে এই জায়গা পর্যটকদের ভীড়ের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকটাই রোজগারের পথ সুবিধা করে দিয়েছে।

জঙ্গলের মাঝখানে সরস্বতীপুর চা বাগানের এই এলাকায় প্রায় ৫০০ - ৭০০ এর মতো আদিবাসী মানুষ বসবাস করে। রোজগার বলতে গেলে ওই চা বাগানের দেখাশোনা, পাতা তোলা কিংবা ফ‍্যাক্টারিতে কাজ করে যা আয় হয়। এছাড়াও অনেকে রবিবার করে নিপানিয়া হাটে দোকান দেন আবার অনেকে গজলডোবায় কাজ করতে যান। বতর্মানে এই জায়গা এখন পর্যটকদের আনাগোনা হওয়ায় খুশি এখানকার মানুষেরা। অনিকেত ওড়াও নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, এই জায়গাটি আগে কেউ চিনতোই না, তাছাড়াও যত জঙ্গল ছিল অনেকেই আসতে ভয় পেত! এখনো মাঝেমধ্যে হাতি বের হয় বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, এই জায়গাটি এখন অনেকের কাছে এক পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে, প্রায় প্রতিদিন অনেকেই ঘুরতে আসছে খুব ভালো লাগছে। পর্যটক কেন্দ্র গড়ে উঠলেও এখানে সেভাবে থাকার ব‍্যবস্থা নেই। ফলে পর্যটকদের ঘুরে চলে যেতে হয়। তবে এই জায়গায় যদি সরকারিভাবে কিংবা বেসরকারি ভাবে পর্যটকদের জন্য সবরকম ব‍্যবস্থা করে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় তাহলে পর্যটনে আরও গতি আসবে বলে মত অনেকের। বেলাকোবা থেকে বিভাস দাসের বিশেষ প্রতিবেদন!
-----------------------------------

Advertisement

Google News

Google News

Follow Us On Google News Click here
close