BARC | ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা করার সুযোগ পেলেন বেলাকোবার তুষার - Khabar Banga | খবর বঙ্গ! - Breaking News! Latest News in Bengali! Today News Jalpaiguri! BARC | ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা করার সুযোগ পেলেন বেলাকোবার তুষার

BARC | ভাভা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা করার সুযোগ পেলেন বেলাকোবার তুষার

বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল ঘেঁষা বেলাকোবা (Belakoba) সংলগ্ন এলাকার ছোট্ট গ্রাম মালিভীটা (Malivita)। আর সেই জঙ্গল লাগোয়া এই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেই থেকে মুম্বইয়ের ভাবা পারমানবিক গবেষণা কেন্দ্রে (Bhabha Atomic Research Centre - BARC) ১ বছরের ওরিয়েনটেশন কোর্স করার সুযোগ পেলেন তুষার কান্তি রায় (২৫)। তুষারের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা গ্রাম।

এবিষয়ে তুষার কান্তি রায় (Tushar Kanti Roy) জানান, ‘চিঠিটি পাওয়ার পর দারুণ আনন্দ হচ্ছে। দেশের এরকম একটি গবেষণা কেন্দ্রে বিজ্ঞানী (Scientist) হিসেবে কাজ করার স্বপ্ন অনেকদিন ধরে দেখছি। ওখানে যোগদানের ছাড়পত্র পেয়েছি। মনে হচ্ছে আমার এবং আমার পরিবারের স্বপ্ন সার্থক হল। আগামী আগস্ট মাসের শুরুতেই মুম্বাইয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে, সেখানে একবছর ট্রেনিং পিরিয়ড চলবে এবং তারপর নির্ধারিত হবে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টিং দেওয়া হবে।

এদিকে তুষারের মা অনিমা রায় (Anima Roy) বলেন, ‘ছেলের ছোটবেলা থেকেই তুষার পড়াশোনার খুব ভালো ছিল। তুষার এমন একটি সংস্থায় পড়ার সুযোগ পেয়েছে জানতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে। ওর বাবা বেঁচে থাকলে আজকে খুব খুশি হতেন।’ তুষারের এই সাফল্যে যারপরনাই খুশি তার জেঠু অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অজিত রায়। অজিতবাবু বলেন, ‘তুষার আগামী দিনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করুক এই কামনা করি।’

রাজগঞ্জের বিধায়ক (MLA) খগেশ্বর রায় বলেন, ‘দারুণ খবর। গর্বে বুকটা ভরে উঠল রাজগঞ্জের বিধায়ক হিসেবে। তুষার আগামী দিনে দেশের নাম উজ্জ্বল করুক এই কামনাই করছি।’ বিডিও প্রশান্ত বর্মন (Prashanta Barman) বলেন, ‘গ্রাম থেকেও যে পড়াশোনা করে অনেক কিছু করা যায় তুষার তার জ্বলন্ত উদাহরণ। তুষার কে দেখে আগামী দিনে এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা অনুপ্রাণিত হবে। দু-একদিনের মধ্যেই আমি তুষারের সঙ্গে দেখা করে তাকে শুভেচ্ছা জানাব।’

তুষারের মা অনিমা রায় সাধারণ গৃহবধূ। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া কিছু জমি চাষ আবাদ করেই চলে তাদের সংসার। বাবা সুভাষ রায় শিক্ষা দপ্তরের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি পরলোক গমন করেন। ছোট ভাই প্রণব রায় (Pranab Roy) রষায়ণ নিয়েই এমএসসি পাস করে পিএইচডি করছেন।

অনেক কষ্টে দুই ছেলের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছেন মা অনিমা। বাড়ির পাশের মালিভিটা প্রাথমিক বিদ্যালয় (Malivita Primary School) থেকে থেকে শুরুহয় প্রথম পড়াশোনার লড়াই। এরপর বেলাকোবা হাই স্কুল (Belakoba High School) থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। শিলিগুড়ি কলেজ (Siliguri College) থেকে কেমিস্ট্রি অনার্স নিয়ে বিএসসি পাস করে গৌহাটি আইআইটিতে ভর্তি হন।

সেখান থেকে এমএসসি পাস করেন। চলতি বছরেই “গেট” পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুম্বাইয়ের (Mumbai) ভাবা পারমানবিক গবেষণা কেন্দ্রে এক বছরের ওরিয়েনটেশন কোর্সের জন্য আবেদন করেন তুষার। লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় পাশ করার পর ভাবা পারমানবিক গবেষণা কেন্দ্রে যোগদানের জন্য তাঁর কাছে চিঠি আসে।

তুষারের সময়ে মালিভিটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন সুর (Tapan Sur) বলেন, ‘খবরটা শোনার পর মনে হল আজকে আমার শিক্ষকতা সার্থক। ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।’ বেলাকোবা হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ইন্দুভূষণ রায় বলেন, ‘তুষার একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে এটা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। তার এই সাফল্যে বুকটা গর্বে ভরে উঠেছে।’

Advertisement
close